শিফাত রাজশাহীতে থাকে। ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ে। ৩য় বর্ষ শেষ করে রাজশাহীতে আসে তার মা বাবার কাছে। এবং তার কিচুদিন পরে আবার সে ঢাকায় ফিরে যায় এবং তখনই ফেসবুকে মিমি নামের একটি মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। সে রাজশাহীর এর একটি স্কুল এন্ড কলেজে পড়ে। ভালভাবে তাদের কথাবার্তা হতে থাকে। কিছুদিন পর মোবাইলে কথা বলা শুরু হয়। আস্তে আস্তে শিফাত এর মিমিকে ভাল লাগে। মিমিও শিফাত কে পছন্দ করত। একদিন সাহস করে প্রপোজ করে শিফাত আর মিমি রাজি হয় কিন্তু তারা তখন ও কেউ কাউকে দেখেনি। শিফাত মিমির সাথে দেখা করতে রাজশাহীতে আসে আর তাদের দেখা হয়। আস্তে আস্তে শিফাত মিমির উপর এতটাই দুর্বল হয়ে যায় যে তার ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হয়। কিন্তু শিফাত মিমির উপর দুর্বল হওয়াতে তার বাবা কে বলে সে রাজশাহীতে চলে আসে এবং এখানকার একটি কলেজে ভর্তি হয় যাতে সে সবসময় মিমির সাথে থাকতে পারে। একদিন হঠাৎ শিফাত খেয়াল করল মিমির মোবাইলে প্রচুর কথা বলে। এ বেপারে সে জিজ্ঞেস করলে মিমি বলে তার বান্ধবীর সাথে কথা বলে। শিফাত আর কথা বাড়ায় নি। হঠাৎ এক রাতে মিমি শিফাতকে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। শিফাত এই কথাটি শোনার পর আর স্থির থাকতে পারেনি। সাথে সাথে ফোন দেয় মিমির বান্ধবি কে। বান্ধবিও একি কথা বলে আর মিমিকে ভুলে যেতে বলে। শিফাত মিমির বাগদত্তার সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ওই রাতে মিমির বাগদত্তার সাথে তার প্রচুর কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। শিফাত অনেক ভেঙ্গে পড়ে। কিন্তু মিমি কে ভুলতে পারেনা। ২ দিন পর শিফাত মিমির বাগদত্তার বেপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই ছেলে আসলে ফটকাবাজ। পরে মিমির বান্ধবি কে এই বেপারে জিজ্ঞেস করলে সে স্বীকার করে বলে ছেলেটির সাথে ৪দিন আগে মিমির পরিচয় হয় আর ছেলেটি অনেক টাকার মালিক। শিফাত কথা গুলো শোনার পর মিমির উপর প্রচুর ক্ষোভ আসতে লাগলো কিন্তু তবুও মিমি কে সে ভালোবাসতো। সে মিমি ও তার বান্ধবি কে ছেলেটির বেপারে সব জানায়। মিমি কে বিষয় গুলো জানানর পর শিফাত মিমি কে তার সাথে থাকতে বলে। হয়ত মিমি তখন বিষয়টি বুঝেছিল। তাদের সম্পর্ক আবার আগের মত চলতে লাগলো। কিন্তু শিফাত এর মনে তবুও একটা ভয় কাজ করত। শিফাত মিমির ফেইজবুক পাসওয়ার্ড জানত না। কিন্তু হটাত করে একদিন সে পাসওয়ার্ড পেয়ে যায় কিন্তু সে মিমিকে ভয়ে তা জানায়না। কিন্তু ১ মাসের ভিতর মিমি বুঝে ফেলে আর তাদের মাঝে আবার ব্রেক আপ হয়। শিফাত অনেক বার মাফ চায় মিমির কাছে কিন্তু মিমি মাফ করেনা উল্টা সে শিফাত এর একটি বন্ধুর সাথে রিলেশান করে। শিফাত মিমি কে বুঝাতে লাগলো কিন্তু লাভ হলনা। পরে ওই বন্ধু শিফাত এর কাছে মিমির নামে অনেক বাজে কথা বলে আর মিমি তা জানতে পারে। মিমি এর সাথে ওই ছেলের ব্রেক আপ হয়। শিফাত তখনও মিমির কাছে মাফ চেয়ে তার সাথে থাকতে বলে। আবার ওদের সম্পর্ক শুরু হয়। শিফাত চেয়েছিল মিমি যাতে সবসময় তার কাছে ভাল ভাবে থাকে। কিন্তু সে শিফাত এর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যা খুশি তাই করত। ফোনে কথা বলা, ঘুরতে যাওয়া এসব বেপারে শিফাত এর কিছুই বলার থাকত না। কিছু বলতে গেলেই সে বলত রিলেশান রাখার দরকার নাই। মিমি কে নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল শিফাত কে। তবুও শিফাত তাকে ভালোবাসতো বলে সব সহ্য করত। রাতে মিমি শিফাত এর সাথে কথা না বলে অন্যদের সাথে কথা বলত আর কথা বলার পরিমান আরও বাড়তে লাগলো। তবুও শিফাত হাসিমুখ নিয়ে মিমির সাথে থাকতে লাগলো। শিফাত তখনও জানতোনা সব মিমির অভিনয়। কিছুদিন পর শিফাত এর কাছে একটি নাম্বার থেকে ফোন আসে, আর যে ফোনটি করে সে মিমির একজন প্রেমিক। মিমি ছেলেটির সাথে ২মাস সম্পর্ক রেখে ব্রেক আপ করে আর তাই ছেলেটি মিমির কল লিস্ট বের করে সেখানে অনেক ছেলের নাম্বার পায় যাদের সাথে মিমির ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা হয়। ছেলেটি আর জানায় মিমির আরও প্রেমিক আছে। পরে শিফাত খবর নিয়ে জানতে পারে মিমি আমেরিকা তে একজন প্রেমিক আছে। রাজশাহীতে আরও একজনের সাথে সম্পর্ক গড়েছে। শিফাত এর সাথে সম্পর্ক হওয়ার আগে ওর অনেক জনের সাথে সম্পর্ক ছিল। শিফাত তখন তার পায়ের নিচে আর মাটি পেলনা। যাকে নিয়ে এত স্বপ্ন দেখল সেই মেয়ে তার স্বপ্ন কে বারবার ভেঙ্গে চুরমার করে দিল। তারপর শিফাত মিমির কলেজে গিয়ে তাকে আলাদা করে ডেকে সব কিছু জিজ্ঞেস করল কিন্তু সে স্বীকার করেনি। এসব নিয়ে তার সাথে অনেক ঝগড়া হল। পরে সে স্বীকার করে। এরপর শিফাত আর কিছু বল্লনা। সব সম্পর্ক কে মাটি চাপা দিয়ে চলে আসতে হল শিফাতকে। মিমির মনে শিফাত কে নিয়ে একটুও চিন্তা আসেনি কারণ হয়ত সে কখনও তাকে মন থেকে ভালোবাসেনি। সে তার আনন্দ নিয়ে আছে। আর শিফাত এখনও মিমি কে ভালোবাসে, ভালবাসবে। মাঝে মাঝে মিমি কে অনেক মনে পড়ে আর কাঁদে আবার কিছুক্ষণ পর চোখের পানি মুছে ফেলে। মিমি হয়ত একদিন তার ভুল বুঝবে, ওকে বুঝতে হবে। আর শিফাত মনে মনে একটি মিথ্যা বারবার বলে, " সত্যি বলছি তোমাকে আর ভালোবাসিনা।
No comments:
Post a Comment